• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ Отзыв о Pinup Wager в мае 2024 года Where To Find Iranian Wives অভয়নগরে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি অভয়নগরে ছাত্র ছাত্রী প্রদর্শনী ক্লাস সবক ও পাগড়ি প্রদান Plinko 2024: Guía para juegos Plinko gratuitos Vietnamese Vs. Thai Mail Order Brides: A Comparative Analysis যশোরের বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে ঢাকা ভাটারা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬, যশোর ও র‌্যাব-১ গোপালগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ’কে পটুয়াখালী হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬ Mostbet App Download For Android Apk And Ios 2023 Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর

শেখ কামালের ৭৩তম জন্মদিন আজ

এইচ এম মেহেদী হাসান
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতি রাষ্ট্রের স্রষ্টা, সারা বিশ্বের নির্যাতিত নিষ্পেষিত জাতির মহান নেতা। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতি রাষ্ট্রের স্রষ্টা, সারা বিশ্বের নির্যাতিত নিষ্পেষিত জাতির মহান নেতা। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ঘর আলোকিত করে ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট শেখ কামাল জন্মগ্রহণ করেন। শেখ কামাল তাঁদের জ্যেষ্ঠ পুত্র। শেখ কামাল ভাইবোনদের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর জন্মের সময় পিতা বঙ্গবন্ধু কাছে ছিলেন না। কারণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মাটি ও মানুষের নেতা, এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের অপর নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তিনি প্রচন্ড এদেশের মানুষকে ভালোবাসতেন, এদেশের মানুষও তাঁকে জীবনের চাইতে বেশি ভালোবাসতো। রাজনীতির ব্যস্ততার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে থাকতে হত, ঘরের বাহিরে এবং বেশিরভাগ সময় জেলখানায়। সেই কারণে শৈশবে শেখ কামাল তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তেমন কাছে পাননি।
শেখ কামালের শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘ অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন-পৃষ্ঠা ২০৯,
একদিন সকালে আমি ও রেণু বিছানায় গল্প করছিলাম। হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা ফেলে আমার কাছে আসে আর ‘আব্বা’ আব্বা, বলে ডাকে।
কামাল চেয়ে থাকে। একসময় কামাল হাসিনাকে বলছে, হাচু আপা, হাচু আপা, তোমার আব্বাকে আমি একটু আব্বা বলি।
আমি আর রেণু দু’জনেই শুনলাম। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ওকে কোলে নিয়ে বললাম, আমিতো তোমারও আব্বা। কামাল আমার কাছে আসতে চাইত না। আজ গলা ধরে পড়ে রইলো। বুঝতে পারলাম, এখন আর ও সহ্য করতে পারছেনা।
বঙ্গবন্ধুর এই লেখা থেকে বুঝা যায় যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে তাঁর পরিবারের চাইতেও তিনি এদেশের মানুষকে সময় দিয়েছেন এবং তাঁদের জন্য জীবন-যৌবন কাটিয়েছেন।
অন্যদিকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব (রেণু) তাঁদের সন্তানদের পিতার অভাব বুঝতে দিতেন না। তিনি নিজেই পিতা-মাতা উভয় হয়ে সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করে তুলেছেন।
শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ(অনার্স) পাস করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের পর পড়াশুনায় মনোযোগী হন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিরে যান এবং সমাজবিজ্ঞান থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি ‘গোল্ডেন গার্ল’ ক্রীড়াবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুলতানা খুকিকে বিয়ে করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের সময় পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সপরিবারে শাহাদতবরণ করেন শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ও তাঁর স্ত্রী সুলতানা কামাল।
ছোট-বড় সবার সঙ্গে শেখ কামাল ছিলেন ঈর্ষণীয় ব্যবহারের অধিকারী একজন মানুষ। সহপাঠী থেকে শিক্ষক সম্মান করতেন সবাইকে। ছিল না কোনো দাম্ভিকতা। ছিল না প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রেসিডেন্টের পুত্রসুলভ কোনো অহমিকা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যা, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ করে, সেই সময় দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে ধানমন্ডির বাড়ি থেকে পাড়ি জমান রণাঙ্গনে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর এইড ডি ক্যাম্প (এডিসি) হিসেবে কাজ করেন।
তরুণ বয়সে শুধু মুক্তিযুদ্ধে গিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি বরং একজন তরুণের জীবন কতখানি কর্মময় হতে পারে তা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জীবন বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এই ২৬ বছরের মধ্যে তিনি যা কিছু অর্জন করেছেন, তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
শহীদ শেখ কামাল ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।
শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে আধুনিক ফুটবলের উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন।
তিনি প্রথম বিদেশি ফুটবল কোচ বাংলাদেশে এনেছিলেন।
শেখ কামাল একজন ক্রিকেট প্রেমীও বটে এবং ফাস্ট বল করতেন।
আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে শেখ কামাল প্রথম বিভাগের লীগে খেলেছেন সেসময়। তাঁর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্কেটবল দল ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও শেখ কামালের ছিল দীপ্ত পদচারণা। আইয়ুব খান দেশে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে শেখ কামাল তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং দেশের প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের-সংস্কৃতি মনা ব্যক্তিদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। ছায়ানটের যন্ত্রসংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবেও নিয়মিত সেতার বাজানো শিখতেন।
শেখ কামাল নিজেই শুধু সংগীতচর্চা করেননি, একইসঙ্গে অন্যদেরও উৎসাহিত করেছেন সমানভাবে।
শেখ কামাল স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী নামের সঙ্গীত সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তিনি নিয়মিত মঞ্চনাটক করতেন এবং কি তিনি কলকাতার মঞ্চেও অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন।
স্বাধীনতার পর গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আন্দোলনের মাধ্যমে নাট্যাঙ্গনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল সেখানেও শেখ কামালের সরোব উপস্থিতি ছিল চোখেপড়ার মত।
বিখ্যাত নাটকের দল ‘ঢাকা থিয়েটার’ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।
বহুমাত্রিক গুণের পাশাপাশি মানুষ হিসেবে শেখ কামাল ছিলেন প্রাণবন্ত, উদার এবং বিনয়ী। শেখ কামাল খুব দ্রুত সময়ে অন্যকে আপন করে নিতে পারতেন। তিনি ছোট-বড় সবার কাছে প্রিয়ভাজন ব্যক্তি হিসেবে সুপরিচিত।
শেখ কামালের মধ্যে লিডারশীপ গুণাবলী ছিল অসীম। তিনি পিতা মুজিবের মতোই নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। একটা কথা আছে রক্ত কথা বলে। যাঁর ধমনীতে জাতির পিতার রক্তস্রোত ধারা বহমান।
স্বাধীনতার পর চারিদিকে আনন্দের জোয়ার, ক্ষমতার দাপট তাঁকে কিছুই স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারেনি। তিনি অবতীর্ণ হন দক্ষ এক সংগঠনের ভূমিকায়। গানের আসর, নাটকের মঞ্চে ছিল তাঁর সরোব উপস্থিতি। সংস্কৃতি অঙ্গনের পাশাপাশি তিনি খেলার মাঠে ছিলেন অগ্রনায়ক।
প্রকৃতপক্ষে শেখ কামাল ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতি আন্দোলনের পথিকৃত।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার মোহ তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র হওয়া সত্বেও খুবই সাধারণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন, খেলার মাঠের সাথীদের কাছে তিনি ছিলেন একজন অতিসাধারণ প্রাণবন্ত অমায়িক ব্যবহারের মানুষ।
এতো কিছুর পরেও শেখ কামালকে নিয়ে স্বাধীনতার পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুখরোচক নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে চেয়েছিল। কিন্তু ধ্রুবতারার মত সত্যবুকে নিয়ে ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এদেশের মানুষের কাছে সত্যিকারের হিরো হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন। কোনো নেতিবাচক সংবাদ কিংবা কোনো ষড়যন্ত্রই তাঁর আকাশসম সম্মানের বিন্দু পরিমাণ বিচ্যুতি ঘটাতে পারেনি। যতদিন চন্দ্র সূর্য আকাশে থাকবে ততোদিনই শেখ কামাল মানুষের হৃদয়ে থাকবেন। ক্যাপ্টেন শহীদ শেখ কামালের (হাচু আপা) বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা, জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশকে আজকে বিশ্বের বুকে উন্নয়ন ও শান্তির রোল মডেলে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের স্বপ্নও তাঁর (হাচু আপা’র) শেখ হাসিনার হাত ধরে আজ বাস্তবায়ন হয়েছে।
শেখ কামালের মত ক্ষণজন্মা পুরুষ, বর্তমান সমাজে খুবই প্রয়োজন। তিনি যুব সমাজের আইকন। তাঁকে আদর্শ হিসেবে নিয়ে যুবসমাজ যদি তাদের জীবনকে গড়ে তুলে তবে সমাজের আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের সততা, আদর্শ, কমিটমেন্ট, দেশপ্রেম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সুস্থ যুব সমাজ গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
মহাকালের মহানায়ক, ইতিহাসের মহামানব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মাত্র ২৬ বছরের জীবনসীমায় দেশ ও সমাজের জন্য যা করে গেছেন তা নিছক কর্ম নয় বরং সেটি তরুণদের উজ্জীবিত হওয়ার মূলমন্ত্রও বটে। তিনি ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। ক্ষণজন্মা এই মহীয়ান পুরুষের আজ ৭৩তম জন্মদিন।
শেখ কামালের মত অসীম সাহসিক, প্রজ্ঞাবান, সৎচরিত্রবান যুবক পৃথিবীর ইতিহাসে তেমন খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্যও বটে।
ক্ষণজন্মা তরুণ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মদিনে তাঁর অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
লেখক : সাংবাদিক-কলামিষ্ট, সহকারী সম্পাদক, দৈনিক সকালের সময়, সাবেক সহ সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.